নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর
থানায় ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের সাথে দুর্ব্যবহার এবং থানার বাইরে গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগে অগ্নিমিত্রা পাল সহ ১৬ জন বিজেপি নেতাকর্মীর নামে FIR রুজু করল মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। দেওয়া হয়েছে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা। এমনকি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছে পুরো বিষয়টিকে নিয়ে।
প্রসঙ্গত , ‘রামনবমীর মিছিল থেকে দাঙ্গা লাগানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ – মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই মন্তব্যের অভিযোগ তুলে মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানায় হাজির হন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানায় দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন তিনি। থানায় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারকে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরূদ্ধে FIR রিসিভ করতে বলেন, আর তা নিয়ে বাকবিতন্ডাও হতে দেখা যায়। থানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার FIR নিতে অস্বীকার করলে ক্ষুব্ধ অগ্নিমিত্রা পাল সহ দলীয় কর্মী সমর্থকরা থানার বাইরে এসে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখায়। প্রায় ঘন্টা খানেক পথ অবরোধের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং কোতোয়ালী থানার আইসি র উপস্থিতিতে FIR গ্ৰহন করা হয়।
এবার সেই ঘটনায় বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করল কোতোয়ালি থানা। কোতোয়ালি থানার মধ্যে ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার কে হুমকি, সরকারি কর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং থানার গেটের তালা লাগিয়ে দেওয়া একাধিক অভিযোগে এবার বিজেপি প্রার্থী এবং বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর পুলিশের। বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস, অগ্নিমিত্রা পাল বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শংকর গুছাইত সহ আরো ১৬ জনের বিরুদ্ধে শত:প্রণোদিত মামলা দায়ের পুলিশের। এদের বিরুদ্ধে ৩৪২, ৩৫৩, ১৮৬ ৫০৬ এবং ১২০ বি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে! এরমধ্যে ৩৫৩ ধারায় জামিন অযোগ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। জমায়েত করে ষড়যন্ত্র এবং অন্যায় ভাবে সরকারি কাজকে প্রভাবিত করার অভিযোগ। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, হ্ই হট্টগোল এবং অনুমতি ছাড়া থানায় জমায়েত ইত্যাদি একাধিক ধারায় এই অভিযোগগুলি দায়ের করা হয়।
এই ঘটনায় বিজেপির পাল্টা অভিযোগ পুলিশ তৃণমূলের দালালে পরিণত হয়েছে।
এ এ প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, “আপনারা জানেন, দুদিন আগে কোচবিহারের সভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সাংবিধানিক বিরোধী মন্তব্য করেছেন। ‘রামনবমীর মিছিল থেকে নাকি দাঙ্গা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, তাই মুসলিম ভাই বোনেরা সতর্ক থাকুন’ একজন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এহেন সংবিধানবিরোধী মন্তব্য করতে পারেন তিনি? তারই প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদের মেদিনীপুর লোকসভার প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা এফআইআর করতে গেলে, আমাদের প্রার্থী কে হেনস্তা করা হয়েছে, ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি, কোথাও আমরা পুলিশের কাজে বাধা দিইনি। আজকে পশ্চিমবঙ্গের সাথে সাথে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ আধিকারিক ধৃতিমান সরকার আইপিএস উনি দায়িত্ব নিয়েছেন তৃণমূলকে জেতাতে, আমাদের ওপর মিথ্যে কেস সাজাতে উঠে পড়ে লেগেছেন।মেদিনীপুর বিপ্লবের মাটি, আন্দোলনের মাটি,আমরা আইনের পথে লড়ব। পুলিশকে অন্যায় ভাবে বিজেপি কার্যকর্তাদের ওপর মিথ্যে কেস সাজাতে দেব না।”