সঙ্কেত ডেস্ক: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ভয়াবহ। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এইভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সেই সঙ্গে যেভাবে নির্যাতিতার নাম, ছবি-সহ পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে তা উদ্বেগজনক বলে প্রতিক্রিয়া প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের। একইসঙ্গে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক সহ সকলের নিরাপত্তায় টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেয়।।
এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘আমরা আরজি কর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করছি।’ চিকিৎসকরা যাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ না করেন এবং কাজে ফিরতে পারেন সেই জন্য এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানেই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক সহ সকলের নিরাপত্তায় টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেয়।
এই টাস্ক ফোর্সে থাকবেন ৯ জন চিকিৎসক। টাস্ক ফোর্স মূলত দু’টি বিষয়ে কাজ করবে। প্রথমত, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের উপর হিংসা এবং লিঙ্গগত বৈষম্য দূর করা। দ্বিতীয়ত, হাসপাতালের চিকিৎসক, ইন্টার্ন, রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ তৈরি করার জন্য একটি নিয়মবিধি তৈরি করা।
হাসপাতালের নিরাপত্তা, পরিকাঠামো উন্নয়ন, সঙ্কটজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মী নিয়োগের বিষয়টি টাস্ক ফোর্স তদারকি করবে। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতন রুখতে যে আইন, তা সরকারি হাসপাতালগুলির পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও কার্যকর রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের নিরাপত্তায় একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে শীর্ষ আদালতের তরফে।
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের পর থেকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এরপর আবার ১৪ তারিখের ঘটনা সেই আতঙ্ক বাড়িয়েছে। সেই রাতে নাকি মহিলা চিকিৎসকদের হোস্টেলে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। এই আবহে পুলিশে আস্থা হারিয়েছে সেখানকার চিকিৎসকরা।তার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন চিকিৎসকরা। যতক্ষণ না তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে ততক্ষণ তাঁরা কাজে ফিরবেন না বলে জানিয়েছিলেন। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের এ বার কাজে ফেরার অনুরোধ করলেন প্রধান বিচারপতি।
এদিন পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা জানিয়েছে আদালত। আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। সামগ্রিক ঘটনায় প্রশ্ন তুলে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রথমে সঠিকভাবে এফআইআর করা হয়নি। পুলিশ কী করছিল! একটা হাসপাতালের মধ্যে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। পুলিশ হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?’

মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা নির্দিষ্ট কোনও ঘটনা নয়। আমরা দেশ জুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। চিকিৎসকরা যাতে নিরাপদে কাজ করতে পারেন সেই দিকটি নিশ্চিত করা দরকার।’

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *