নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অখিলভারত হিন্দুমহাসভার রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে মহাসভার মহিলা সদস্যরা এই বছর রাখিবন্ধন উৎসব উৎসর্গ করতে চলেছে ডক্টর মৌমিতা দেবনাথ সহ স্বপ্নদীপ কুন্ডু, কামদুনির নির্যাতিতা, ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, তাপসী মালিক, ধানতলা, বানতলা, নেতাই, নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, আনন্দমার্গি হত্যাকাণ্ড, মরিচঝাঁপি হত্যাকাণ্ড সহ একাধিক নারকীয় ঘটনায় প্রাণ হারানো মানুষদের উদ্দ্যেশ্যে । এই বছর তারা কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে পুলিশকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষাকর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য ও আপামর জনসাধারণের হাতে রাখি বাঁধার পাশাপাশি কিছু উপহার দিয়ে তাদের অঙ্গীকার জাতি, ধর্ম, বর্ণ, আর্থিক ক্ষমতা, রাজনৈতিক পরিচয় সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে এতদিন ধরে হয়ে আসা সমস্ত অপরাধের বিচার চাই, আর নয় অন্যায় । চন্দ্রচূড় বাবু বলেন ডক্টর মৌমিতা দেবনাথের উপর পাশবিক অত্যাচারকারী সমস্ত অপরাধীদের ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে । কিন্ত সেই সাথে আমরা যেন বর্তমান বাংলাদেশ বা বিগত বছর গুলোতে হওয়া মরিচঝাঁপি, বিজনসেতুতে আনন্দমার্গি এবং অন্যান্য হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারানো নিরপরাধ মানুষদের ভুলে না যাই । তিনি আরো বলেন রাজনৈতিক দলগুলোর খুনি অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়া বা মৃত ব্যক্তির মধ্যে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার উদ্দ্যেশ্যে শকুনের মত লোলুপ দৃষ্টিতে লাশের রাজনীতি করা কোনোটাই সুস্থ সমাজ ব্যবস্থায় অভিপ্রেত নয় । সম্প্রতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পরলোক গমন করেছেন কিন্তু ওনার শাসনকালে হেঁতাল পারেখের আসল খুনিকে আড়াল করতে গিয়ে যেভাবে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে শুধুমাত্র গরীব হওয়ার কারণে ফাঁসিতে ঝোলানো হলো এবং সেই ঘটনায় বুদ্ধদেবের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যে নিন্দনীয় ভূমিকা ছিল তা এক কথায় ঘৃণ্যতম বললেও কম বলা হয় । আর.জি.কর. হাসপাতালের সামনে আন্দোলনরত ডাক্তারদের ওপর কারা রাত্রিবেলায় আক্রমণ করলো সেই বিষয়েও নিশ্ছিদ্র তদন্ত হওয়া প্রয়োজন । আর.জি.কর. ঘটনায় অপরাধীদের কঠিনতম শাস্তি হওয়া প্রয়োজন কারণ অপরাধী হিসেবে যে নামগুলো উঠে আসছে শোনা যাচ্ছে তারা কেউ সিভিক পুলিশ আর কেউ ডাক্তার । অর্থাৎ ছত্রিশ ঘণ্টা মানুষের জীবন বাঁচিয়ে ধর্ষিতা ও খুন হওয়া একজন ডাক্তারেকে দলবদ্ধ হয়ে যারা খুন করলো তারাও কিন্ত ডাক্তার । এটা সারা পৃথিবীর কাছে নিকৃষ্টতম খুন বললেও বোধ হয় কম বলা হয় কারণ এখানে রক্ষকই ভক্ষক । সেই সাথে আমাদের প্রত্যেকের মাথায় রাখা উচিত এই অস্থির অবস্থায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চিকিৎসা করাতে যাওয়া সাধারণ মুমূর্ষু রুগী ও অসুস্থ মানুষেরা যারা সম্পূর্ণভাবে এই অপরাধ জগতের বলয়ের বাইরে । তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া একান্ত ভাবে কাম্য । রাখি উৎসব পর্যন্ত এক স্বাভাবিক সুস্থ ও সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য এই বিষয়ে তাদের লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন হিন্দু মহাসভার সদস্যরা ।*