তারক হরি, পশ্চিম মেদিনীপুর
“খোল দ্বার খোল, লাগলো যে দল”, কয়েক ঘণ্টা গড়ালেই বসন্ত উৎসব। বঙ্গবাসী মজবে নানা রঙের সাজে।
ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোল উৎসব বা দোল যাত্রা মহা সমারহে দেশ জুড়ে পালন হয়।
উল্লেখ্য,প্রাচীন ভারতের বৃন্দাবনে দোল যাত্রার প্রচলন থাকলেও বাংলায় সেই অর্থে কোন দিনই ছিল না, এই রাজ্যে দোল যাত্রা প্রচলিত হয়েছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকে, তাঁর সাধের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবে এই উৎসব পালন করে সূচনা হয় বসন্ত উৎসবের।আর এই রংবেরঙের খেলায় আবির ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ। কিন্তু এখন বাজারে নানান কেমিকেল মিশ্রিত আবির ছেয়ে গিয়েছে। খুশির খেয়ালে মানুষজন রঙে মাতলেও পরে বাজারজাত সেই আবির ব্যাবহারের ফলে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জী, স্কিনের সমস্যা আরও নানান ধরনের সমস্যা দেখা যায়।
এই সমস্যা মেটাতে ভেষজ আবির তৈরি এবং বিক্রিতে জোর দিয়েছিলো রাজ্য সরকার। এবার সেই ভেষজ আবির তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খুদে পড়ুয়ারা। তবে এবারে তা প্রথম নয় বেশ কয়েক বছর ধরে তারা স্কুলেই শিক্ষকদের সহযোগিতায় গাছপালা ফুল থেকে বানিয়ে নিচ্ছে ভেষজ আবীর।আর সেই আবিরেই নিজেদের রাঙিয়ে তুলবে মেদিনীপুর সদর ব্লকের পলাশী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে পড়ুয়ারা।গত কয়েক আগে থেকেই এ সোচ আবির বানাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি যেমন ধনেপাতা,পালং শাক, বিট, গাজর, কাঁচা হলুদ, পুঁই এর পাকা বীজ ও পলাশ ফুল থেকে রস বের করে অ্যারারুটে মিশিয়ে বিভিন্ন রঙের ভেষজ আবির তৈরি করছে এবং পাশে থেকে হাতে কলমে সহযোগিতা করছেন স্কুলের শিক্ষকেরাও।
পলাশী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই সহ শিক্ষক কৌশিক কুমার লোধ ও অসীম কুমার মন্ডল জানান, “প্রতিবছরই আমাদের বিদ্যালয়ে এই হাতে-কলমে ভেষজ আবির তৈরী করা হয়। খুদে পরওয়ারা বেশ আনন্দের সাথে আবেগ তৈরীর কাজে মজেছে।এই কর্মশালার মাধ্যমে সহজেই কচিকাঁচাদের হাতে-কলমে পরিবেশ ও প্রকৃতি পাঠ দেওয়া সম্ভব হয়, তাই আমরা এই আয়োজন করেছি।” বিদ্যালয়ের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বসন্ত উৎসবে মেতে উঠলো পড়ুয়ারা।তারা জানিয়েছে, তাদের তৈরি অবিরেই নানা রঙে রাঙিয়ে নিজেদের তুলবে তারা।