সংবাদদাতা,কলকাতা: যখন CAG এর রিপোর্টের ভিত্তিতে দুর্নীতি নিয়ে বিতর্ক চলছে রাজ্যের শাসকদল টিএমসি এবং প্রধান বিরোধীদল বিজেপির মধ্যে । তখনই এই বাংলাতেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্তম যে ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামের গরিমা আজ সীমাহীন দুর্নীতির অন্ধকারে নিমজ্জিত । অথচ নাকের ডগা দিয়ে গর্হিততম দুর্নীতি হতে দেখেও মিউজিয়ামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজ্যপাল যখন সম্পূর্ন নিশ্চুপ থাকেন তখন মানুষ প্রশ্ন তুলছেন এখানে রাজ্যপালের ভূমিকা কি মহাভারতের দুর্যোধনের মত নাকি অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মত ?অভিযোগ ভারত সরকারের সাংস্কৃতিক দপ্তরের অধিনস্ত ভারতীয় জাদুঘর কার্য্যত অপরাধের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। অপরাধের তালিকায় কি নেই এখানে ? ভারত সরকারেরই CAG এর রিপোর্ট দেখাচ্ছে জাদুঘরে ১০৯ কোটি টাকার মধ্যে বহু কোটি টাকার দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে । অভিযোগ এখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় বিপাকে পড়েছেন কর্মচারীরা। SC, ST, OBC এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কর্মচারীদের তাদের প্রাপ্য পদাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে । আধিকারিকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে নারীর শ্লীলতাহানি, চৌর্যবৃত্তি, জাল সই, তথ্য গোপন, জাল সার্টিফিকেট, হানি ট্র্যাপ বা মহিলা দিয়ে চক্রান্ত করে ফাঁসানো ও নানাবিধ মারাত্মক সামাজিক অপরাধের অভিযোগে এনেছেন পরস্পরের বিরুদ্ধে । সম্প্রতি বছর দুই আগে মিউজিয়ামে কমলিনি কুন্ডু বিশ্বাস নামের জনৈক কর্মচারী অর্ণব বসু নামে কর্মীর বিরুদ্ধে শ্লীলতা হানির অভিযোগ করেন ।ওই দিন মিউজিয়ামে কমলিনি বিশ্বাসের এক সহকর্মীর ফোনে সহ কর্মীদের নিয়ে মিউজিয়ামে ছুটে যান বিশিষ্ট সমাজসেবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী ।টিকিট কেটে মিউজিয়াম এ ঢুকে, ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশকে ডাকার বন্দোবস্ত করেন তিনি । এরপর এই মূল কেসটি বর্তমানে মিটে গেলেও এডুকেশন অফিসার সায়ন ভট্টাচার্য্য চন্দ্রচূড় বাবুর বিরুদ্ধে ট্রেসপাসিংয়ের কেস করেন বলে শোনা যায় । এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে চন্দ্রচূড় বাবুর স্পষ্ট বক্তব্য ইতিপূর্বে এডুকেশন অফিসার সায়ন ভট্টাচার্য্য, প্রাক্তন ডিরেক্টর রাজেশ পুরোহিত এবং ইউনিয়নের একাধিক নেতৃত্বের ডাকে বহুবার সাংগঠনিক মিটিংয়ে ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে গেছি । মূলত সায়ন ভট্টাচার্য্য, রাজেশ পুরোহিত এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক সংগঠকই পরস্পরের বিরুদ্ধে গর্হিত দুর্নীতির অভিযোগে করেছেন এবং বহু তথ্য প্রমাণ ওনাকে দিয়েছেন । এমনকি তারা ইতিপূর্বে বহুবার বহু সাংগঠনিক সমস্যা সমাধানের জন্য ফোন এবং মেল করেও ওনাকে ডেকেছেন । তাদের মধ্যে কেউ এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোনো অভিযোগ করতে চাইলে মাথায় রাখা দরকার এই বাংলায় আইনের শাসন চলে । এখানে মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, বিচার ব্যবস্থা বা আইন আদালতের বিচারকরা প্রত্যেকেই খুব সংবেদনশীল । কাজেই ব্যাক্তিগত ভাবে খুব মর্মাহত হলেও উনি একটুও বিচলিত নন । তিনি বিষয় টিকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলেই দাবি করেন । চন্দ্রচূড় বাবুর অভিযোগ তার নেতৃত্বে হিন্দুমহাসভা দলগত ভাবে দীর্ঘ পঁচাত্তর বছর পর লোকসভা নির্বাচনে প্রকৃত সনাতনী জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে অংশগ্রহণ করতে চলেছে বলেই কেন্দ্রের মেকি হিন্দুত্ববাদী শাসকদল ভয় পেয়ে এইসব করাচ্ছে ।
অন্য দিকে হিন্দু মহাসভার মিডিয়া এবং পাবলিক রেলেশনশিপ কনভেনর অনামিকা দে বলেন ভারতবাসী এবং মূলত বাঙ্গালীদের উপর বহুযুগ ধরেই আক্রমণ করে এসেছে বিদেশি শক্তি । কিন্তু দেশের মধ্যেই যদি কিছু মানুষ ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামের মত একটি জাতীয় গর্বের প্রতিষ্ঠানকে কলুষিত করে তখন অবশ্যই সমাজের সর্বস্তরে তার প্রতিবাদ হওয়া উচিৎ । সেই জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষদের কাছে উনি মহাসভার পক্ষ থেকে আবেদন করেন এই দুর্নীতিবিরুদ্ধে পাশে থাকার জন্য।