নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্কালে যে মৃত্যু মিছিল, অরাজকতা এবং সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের উপর অত্যাচার চলছে সেই বিষয়ে রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে একাধিক কর্মসূচী গ্রহণ করলো অখিলভারত হিন্দুমহাসভা পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ । মহাসভার পক্ষ থেকে একদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের গৃহীত কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে । অন্যদিকে হিন্দু মহাসভার রাজ্য কমিটির প্রতিনিধি মন্ডল বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডেপুটেশন দেওয়ার পাশাপাশি মেল করেও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালো । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দপ্তরেও স্পিড পোস্টে চিঠি পাঠিয়ে বাংলাদেশের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে গভীর ভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে । ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য বাংলাদেশের মনে রাখা উচিৎ আজ তারা পৃথিবীতে স্বাধীন দেশ হিসেবে যে পরিচয় বহন করছে সেটা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের হাজার হাজার সেনা জওয়ানদের বীরত্ব ও আত্মবলিদানের বিনিময়ে । তাদের দেশের লক্ষ লক্ষ অসুস্থ মানুষ প্রতি বছর শুধুমাত্র উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রাণ বাঁচাতে ভারতে আসে এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যায় । এহেন বাংলাদেশে বেছে বেছে হিন্দুদের বাড়িতে আক্রমণ ও বাড়ি লুঠ, মন্দিরে অগ্নি সংযোগ, মহিলাদের ধর্ষণ এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের নির্বিচারে হত্যা করা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং গর্হিত অপরাধ । ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্কালে যেভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তিতে কালি মাখিয়ে, গলায় জুতার মালা পড়িয়ে, মাথায় প্রস্রাব করে আন্দোলনকারীরা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মূর্তিগুলো ভাঙলো, বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন লুঠ করা, লাইব্রেরি ও বই পুড়িয়ে দেওয়া, ঘর ভেঙে ঢুকে সংখ্যালঘুদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া, পুড়িয়ে মারা বা পিটিয়ে মেরেফেলে ফ্লাইওভার থেকে মৃতদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হল তাতে একটি কথা স্পষ্ট ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে একটি ধর্মীয় মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী কাজ করছে । এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে চীন ও পাকিস্তানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও থাকতে পারে । যে দেশ ও জাতি নিজেদের জাতীয় সঙ্গীতের স্রষ্টা বিশ্ব মানব রবীন্দ্রনাথের মূর্তির মাথা ভেঙে তার গলায় জুতার মালা ও মুখে লিকোপ্লাস্টার লাগাতে পারে, যারা তাদের জন্মদাতা দেশ ভারতের কাছে সমস্ত রকম সহযোগিতা পেয়েও ছাত্র আন্দোলনে তীব্র ভারত বিরোধী ও হিন্দু বিরোধী স্লোগান তুলতে পারে বা নিজেরা বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খুব খারাপ ফল করেও ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের পরাজয়ে পৈশাচিক আনন্দ করতে পারে তাদের কৃতকর্ম সমস্ত মানব জাতির মাথা লজ্জায় হেট করে দিয়েছে । বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনে সেই দেশে বত্রিশ শতাংশ থেকে কমে আট শতাংশে নেমে আসা সংখ্যালঘু হিন্দুদের বা ভারত রাষ্ট্রের তো কোন ভূমিকাই নেই কিন্তু তার পরেও বেছে বেছে হিন্দুদের যেভাবে জিহাদী আক্রমণের শিকার করা হচ্ছে তাতে বাংলাদেশী হিন্দুদের শুধু সহবাগে বিরাট জনসভা করে ক্ষান্ত থাকলেই চলবে না এরপর বাঁচার তাগিদে সন্ত্রাসবাদীদের দেখানো পথে তাদের ভাষাতেই উত্তর দিতে হবে বলে জানিয়েছেন ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী । বাংলাদেশ হাইকমিশনে ডেপুটেশন জানানোর সময় আজ সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী, অনামিকা মন্ডল, সৌভিক দে, সুমন সরকার , আঞ্জুয়ারা বেগম সহ আরো অনেক শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন । হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে আজ সমস্ত পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আবেদনের পাশাপাশি কোনোরকম সাম্প্রদায়িক বা মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্ররোচনায় পা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে ।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *