নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: বিধানসভার গেটে বিজেপির সবজির বাজারে আলুওয়ালা শুভেন্দু । শুক্রবার ভরদুপুরে এমনই আজব দৃশ্য দেখা গেল বিধানসভা ভবনের মেইন গেট চত্বরে । হাতে সাদা কাগজের থালায় লেখা স্লোগান, গলায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিজেপির দোকানদার বিধায়কেরা হাজির হয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের মিনি সবজি মার্কেটে।মার্কেট বলতে দুটো টেবিল, তার উপরে রাখা কিছু সবজি এবং আলুর প্যাকেট। ১০ টাকা কেজি দরে আলুও বিক্রি করেন তাঁরা। বিধানসভা চত্বরে মিছিল করে মুখে ২০-এর ঘরের নামতার নয়া সংস্করণ নিয়ে আজ বিক্ষোভ দেখালেন শুভেন্দুরা। শুধু মুখেই যে নামতা ছিল তা নয় বুকে ছাপানো প্ল্যাকার্ডেও সেই নামতা জ্বলজ্বল করছিল।বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে এদিন প্রতীকী সবজি বিক্রি করা হয়। তাঁদের দাবি, ৪০ টাকার আলু এদিন ১০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য রপ্তানি বন্ধের বিষয় নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছিল। আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটে আলুর হাহাকার পড়ে যায় বাজারজুড়ে। শেষমেষ কৃষিমন্ত্রী বেচারাম মান্নার মধ্যস্থতায় ধর্মঘট তুলে আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আলুর সাপ্লাই চেইন। নবান্নের সভা থেকে লাগামছাড়া সবজি মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা। বাজারে বাজারে ঘুরেছে সরকারি টাস্কফোর্সও।কিন্তু তা সত্ত্বেও আলু থেকে শুরু করে সাধারণ সবজি, দাম সেরকম ভাবে কিছুই কমেনি। আর এবার এই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদের আঁচ পৌঁছে গেল বিধানসভাতেও। গত বৃহস্পতিবারই ভিন রাজ্যের আলুর রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে কোচবিহারে । নিজের ফেসবুকে সেই সংক্রান্ত ভিডিও দিয়ে গোটা বিষয়টিতে সরকারকে হস্তক্ষেপের দাবী জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। রাজ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সে বিষয়ে আলোচনা চেয়ে শুক্রবার বিধানসভায় মুলতবি প্রস্তাব এনেছিল বিজেপি। আলোচনায় অংশ নিয়েও পরে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়কেরা। গলায় সবজির প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে ১০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেন শুভেন্দু অধিকারী।
প্রতীকী সবজি বিক্রির সময় শুভেন্দু বলেন, “২০ এক্কে পাউচ, ২০ দু’গুণে আলু, তিন ২০ টমেটো, পাঁচ ২০ ক্যাপসিকম, সাত ২০ রসুন, আট ২০ আদা, নয় ২০ মটরশুটি, ২০ দশে মুরগি।” একই সঙ্গে বিজেপি বিধায়করা স্লোগান তোলেন, “এতদাম খাব কী, মমতা যাবে কি!”
এই বিক্ষোভের বিরোধিতা করেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ”মূল্যবৃদ্ধির খবর জানামাত্রই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোরাধ্যায় ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। এখন বাজারে সবজির দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবু প্রচারের জন্য বিরোধীরা এসব নাটক করছে।”বিধানসভায় একই কথা শুনিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “পেট্রোপণ্যের দাম বাড়লে জিনিসের দাম বাড়ে। আপনারা সেটা জানেন। অতএব বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করছেন।”