সঙ্কেত ডেস্ক: কুয়াশায় মোড়া সকাল । সেইসঙ্গে হাড়কাঁপানো শীত । কিন্তু, সেসব উপেক্ষা করেই পূণ্যস্নানের জন্য অজয় নদের তীরেও ভিড় করেছেন পূণ্যার্থীরা । সোমবার ভোরে মকর স্নানে গা ভাসাতে ইতিমধ্যে কাতারে কাতারে মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন অজয়ের চরে। সূর্যের আলো ফোটার আগে থেকেই পূণ্য অর্জনের আশায় অজয়ের জলে ডুব দিচ্ছেন পূণ্যার্থীরা।তারপর পুজো দিচ্ছেন রাধা বিনোদের মন্দিরে । সকাল থেকেই মন্দিরের সামনে লম্বা লাইন । প্রায় ২০০ আখড়ায় প্রসাদ গ্রহণের জন্য মানুষের ভিড় ।
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে এখানে মেলা বসে । এবারও তার অন্যথা হয়নি ।বীরভূমে জয়দেবের স্মৃতি বিজরিত গীত-গোবিন্দ কাব্যের মাহাত্ম্য ভরা জয়দেব মেলা হয় প্রতি বছর। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকি রাজ্যের বাইরে থেকেও বহু পূণ্যার্থী এই জয়দেব মেলায় এসে পৌঁছেছেন । মকর স্নানে গা ভাসাতে ইতিমধ্যে কাতারে কাতারে মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন অজয়ের চরে। সংস্কৃতি চর্চার মেলবন্ধনের ভরকেন্দ্র সেই জয়দেবে মেতে উঠেছে মিলনের সুরে। শুধুমাত্র বাংলার শিল্পী-সাধকরা নন। দেশ-বিদেশের বাউল ফকিরদের নিয়ে গানের আখড়া বসে এখানে। এবারেও আড়াইশোর বেশি গানের আখড়া বসেছে।
রবিবার এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি কাজল শেখ, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক বিধান রায়, আখড়া কমিটির সভাপতি পরিতোষ চক্রবর্তী, আশ্রম কমিটির সভাপতি গোপাল ব্রহ্মচারী-সহ অন্যান্যরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মাননা জানানো হয় বীরভূমের প্রবীণ বাউল শিল্পী বাঁকাশ্যাম দাস, কার্তিক দাস ও লক্ষণ দাস বাউলকে।
ঐতিহ্যবাহী এই মেলাতে লক্ষাধিক পুণ্যার্থীদের সবরকম নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে শতাধিক সিসি ক্যামেরা। ২৫০০ পুলিশকর্মী ছাড়াও স্লিপার কুকুর দিয়ে ও নজরদারি শুরু হয়েছে। নদীর পাড়গুলিতে বসানো হয়েছে অস্থায়ী শৌচাগার। এছাড়াও বায়ো টয়লেটও বসানো হয়েছে। ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই মেলা।