সংবাদদাতা, কলকাতা: মহা শিবরাত্রি এবং আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন রাজ্য সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে অখিলভারত হিন্দুমহাসভা তাদের “Food For Humanity” প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প স্বদেশী অর্থনৈতিক আন্দোলনের শুভ সূচনা করলো । দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর থানা সংলগ্ন অঞ্চলে তাদের প্রথম আউটলেট “স্বাদে ও আস্বাদে” খোলা হলো সংগঠনেরই নেত্রী বিদ্যুৎপর্ণা দাসের সহযোগিতায় । বিদ্যুৎপর্ণাকেই দক্ষিণ কলকাতার কনভেনর ঘোষণা করা হয়েছে । খাদ্যাভ্যাসের সাথে কখনোই ধর্মকে মিলিয়ে দেওয়া ঠিক নয় মূলত এই বার্তাই দিতে চায় মহাসভা । একটি নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষ যেমন হালাল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পক্ষে । আবার তেমনই তার বিরুদ্ধে সাত্ত্বিক অর্থনীতির পক্ষে সওয়াল করছেন অন্য এক ধর্মাবলম্বী মানুষ । হিন্দু মহাসভার স্পষ্ট বক্তব্য ভারত যদি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হয় তাহলে সেখানে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হালাল, হারাম বা সাত্ত্বিক এই সমস্ত বিভেদের উল্লেখ থাকবে কেন ? সম্প্রতি স্বামী বিবেকানন্দ এবং রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের আমিষ খাওয়া নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে ইসকনের অমোঘলীলা প্রভু এবং সেই বিষয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় । হিন্দু মহাসভার বক্তব্য হিন্দু ধর্মে আমিষ ও নিরামিষ উভয় খাদ্যাভ্যাসেরই প্রচলন রয়েছে সুদূর অতীত থেকেই । রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী আরো এক ধাপ এগিয়ে ঐতিহাসিক তথ্য তুলে ধরে বলেন ভারতের অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্য বিরিয়ানীকে আরবীয় সংস্কৃতির সাথে জুড়ে দেওয়া ঠিক নয় । সংস্কৃতে এই খাদ্যের উল্লেখ রয়েছে । সেখানে তাকে মাংসদোন বলে উল্লেখ করা হয়েছে । মহাভারতের সময় রাজা নীলের মাংসদোন বা বিরিয়ানী রান্নার উল্লেখ রয়েছে । অর্জুন পুত্র অভিমন্যুর বিবাহ বাসরেও বিরিয়ানী রান্না করা হয়েছিল । কাজেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অখিলভারত হিন্দুমহাসভা যে বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রচার করতে চলেছে তার একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ অবশ্যই হতে চলেছে তাদের Food For Humanity প্রকল্প । হিন্দু মহাসভা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে পরিকল্পনা করেছে কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু জায়গায় অস্থায়ী টি স্টল এবং খাবারের আউটলেট করে তারা ক্রেতাদের কাছে হিন্দু মহাসভার লোকসভা নির্বাচনের ইস্তেহার পত্র তুলে দিয়ে নির্বাচনী প্রচার করবে ঠিক যেমন সিপাহী বিদ্রোহের সময় রুটিতে আন্দোলনের ব্যাপারে লিখে ভারতীয় সিপাহীদের আন্দোলনের সাথে যুক্ত করা হত । আগামী দিনে বাংলার আরো একাধিক জায়গায় Food For Humanity আউটলেট খোলার এবং একাধিক সনাতনী জাতীয়তাবাদী ফুড স্টলকে এই প্রকল্পের আওতায় যুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানালেন শ্রাবণী মুখার্জী, দীপ্তিশ গুহ সহ হিন্দুমহাসভার একাধিক রাজ্য নেতৃত্ব ।