নিজস্ব প্রতিনিধি: এখনও ঝাড়গ্রামে হাতি মৃত্যুর রেশ কাটেনি। তবে এরই মাঝে দেখা গেল এক অন্য ছবি। মঙ্গলবার সকাল প্রায় দশটা নাগাদ সদ্যোজাত শাবককে নিয়ে ভরা নদী পার হতে হল হস্তিনীকে। নেপথ্যে মানুষের ‘অত্যাচার’। মানুষের তাড়া খেয়ে বাধ্য হয়ে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের মানিকপাড়া রেঞ্জের চিথলবনী এলাকা থেকে কংসাবতী নদী পেরিয়ে মেদিনীপুর বন বিভাগের চাঁদড়ার জঙ্গলে প্রবেশ করে। যা দেখে কার্যত থ পশুপ্রেমীরা। প্রশ্ন উঠছে, কেন হাতি দুটিকে ওখানে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করল না বনদপ্তর? কেন আটকানো গেল না মানুষের ভিড়? ঝোপের মধ্যে ঢুকে ভিডিও এবং উত্ত্যক্ত করার চিত্র ফের দেখা গেল। যদিও মানিকপাড়া রেঞ্জ আধিকারিক সব্যসাচী হাজরা বলেন, “ওই হাতি দুটি কলাইকুন্ডা থেকে চাঁদড়ার দিকে যাচ্ছিল। দিনের আলোর ফোটে যাওয়ায় একটি ঝোপে থেকে যায়। মানুষজন চিৎকার চেঁচামেচি করছিলেন। আমাদের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতি দুটিকে নিরাপদেই রেখেছিলেন। পরে হাতি দুটি কংসাবতী নদী পেরিয়ে চাঁদড়া রেঞ্জের দিকে চলে যায়। হাতি দুটিকে তাড়ানো হয় নি।” জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার অধিকাংশ জঙ্গল এলাকায় বসবাস হাতিদের। কিন্তু জঙ্গলে থাকা কার্যত দায়ী হয়ে উঠছে দলমাদের। কারণ জঙ্গলে খাদ্যাভাব এবং লোকালয়ে এলে মানুষের তাড়া। চলতি মাসে জ্বলন্ত শলাকা বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক স্ত্রী হাতির। সেই রেশ এখনও কাটেনি। তবে মানিকপাড়া রেঞ্জে থাকা শাবক সহ হাতিকে বিরক্ত করার ছবি সামনে এসেছে। ভরা নদী পেরিয়ে বাধ্য হয়ে মানিকপাড়া রেঞ্জ থেকে মেদিনীপুরের চাঁদড়া রেঞ্জে প্রবেশ করেছে শিশু শাবক সহ হস্তিনীটি। তবে সতর্ক ছিল মেদিনীপুর বনবিভাগের চাঁদড়া রেঞ্জ। বনকর্মীরা কংসাবতী নদী থেকে হাতি দুটিকে কার্যত ব্যারিকেট করে জঙ্গলে পৌঁছে দেয়। সাহায্য নিয়েছিল গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশের। এলাকায় মাইকিং করা হয় হাতিকে উত্ত্যক্ত না করার। তবে দিনের বেলায় হাতি লোকালয়ে আশায় ভিড় জমান কয়েক হাজার উৎসুক জনতা। ফলে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়েছে, হাতিকে উত্ত্যক্ত করলে এবং চলাচলে বাধা সৃষ্টি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন দুপুরবেলা সুস্থভাবে চাঁদড়ার শুকনাখালির জঙ্গলে প্রবেশ করে হাতিটি। চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সৈকত বিশ্বাস বলেন, “শাবককে নিয়ে হস্তিনী নদী পেরোনোর পরই বনকর্মীরা ব্যারিকেট তৈরি করে, যাতে মানুষজন তার দিকে পাথর না ছোঁড়ে বা উত্ত্যক্ত না করে। কোনোভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয় নি হাতিটিকে জঙ্গলে পাঠানোর। হাতি দুটি নিজের মর্জিতে কয়েক ঘণ্টা পর কৃষি জমি পেরিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করেছে। শাবক সহ হস্তিনী সুস্থ রয়েছে।”